About Us

"আমি আসছি তোর ঘরে..."এটা ছিল না কোনো সাধারণ স্বপ্ন। এই একটিমাত্র বাক্য দিয়েই সূচনা হয়েছিল এক অলৌকিক ইতিহাসের।প্রায় ৩০০ বছর আগের কথা | মধ্য হাওড়ার বর্তমান শ্যামাশ্রী সিনেমা অঞ্চল তখন বন-জঙ্গলে ঘেরা, নির্জন, মানববসতির শুরু তখনই মাত্র।সেই সময়ে শ্রী সুরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন ওই অঞ্চলে। তাঁর বাড়ির পাশে ছিল একটি বড় পুকুর। একদিন গভীর রাত্রে, মা শীতলা স্বপ্নে এসে বললেন— "আমি আসছি তোর ঘরে..."স্বপ্নাদেশে হতবাক হয়ে যান সুরেন্দ্রনাথ। পরদিন স্ত্রীকে জানান, তিনিও বিস্ময়ে অভিভূত। স্বপ্ন সত্যি হবে কি না, বোঝার আগেই কয়েকদিন পর এক সকালে পুকুরে স্নানে নেমে গায়ে ভারী কিছু অনুভব করেন তিনি। প্রতিবেশীদের ডেকে তোলেন।খবর ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। স্থানীয় জমিদার শ্রী মনীন্দ্র নারায়ণ দাস সাঁতরা লোকবল নিয়ে এসে হাজির হন। পুকুর থেকে ওঠে আসে এক অলৌকিক বস্তু— অষ্টধাতুর মা শীতলার মূর্তি। সবাই মুগ্ধ হয়ে পড়েন মা-র মূর্তির সৌন্দর্যে ও মহিমায়।জমিদার স্থির করেন—এই পবিত্র স্থানেই হবে মা শীতলার মন্দির। মন্দির নির্মিত হয়, আর তার দায়িত্বভার অর্পণ করা হয় স্বপ্নাদেশপ্রাপ্ত শ্রী সুরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে।সেই থেকে প্রতি বছর অক্ষয় তৃতীয়ার পরের শনিবার মহাআড়ম্বরে পালিত হয় মায়ের বাৎসরিক পূজা ও ঠান্ডা উপোস। শুরু হয় ছাগবলির প্রথাও।পরবর্তী প্রজন্মে মন্দিরের দায়িত্ব পান শ্রী রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর আমলে মা-র মাহাত্ম্য আরও ছড়িয়ে পড়ে। বসন্তরোগে আক্রান্ত লোকেরা দূর দূরান্ত থেকে মা-র কাছে আসতে শুরু করেন।এরপর মন্দির সংস্কার করেন তাঁর পুত্র শ্রী নিত্যানন্দ চক্রবর্তী। পরবর্তীকালে ছাগবলি প্রথা বন্ধ হয় কিছু বাধার কারণে। বর্তমানে মন্দির পরিচালনায় আছেন শ্রী শম্ভু চক্রবর্তী।২০০৯ সালে মা-র ঘটের নবকলেবর ও মন্দিরের পুনঃসংস্কার করা হয় ভক্তদের উদ্যোগে। তবে আজ আর সেই পুকুরটি নেই।তবুও বছরের পর বছর ধরে মা এখানে বিরাজমান।ভক্তরা বলেন— “মা কখোনো খালি হাতে ফেরান না।”যার যা মনস্কামনা, মা তা পূরণ করেন। কেউ কষ্ট পেলে মা কষ্ট পান, আবার আনন্দে থাকলে মা-ও হেসে ওঠেন। অনেকে দেখেছেন—মা-র মুখে পরিবর্তন ঘটে, যেন মা নিজেই অনুভব করেন ভক্তের আবেগ।মায়ের শান্তির জলের ছোঁয়ায় বসন্তরোগের যন্ত্রণা নিমেষেই লাঘব পায়। আর মা-র অপার শান্ত মুখখানি দেখলে, সমস্ত কষ্ট হৃদয় থেকে গলে যায়।আগামী ৩রা মে, ২০২৫, শনিবার মহাআড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মায়ের বাৎসরিক পূজা ও ঠান্ডা উপোস। আপনাদের সকলকে জানাই আন্তরিক আমন্ত্রণ। আসুন, মা-র দর্শনে এসে কৃপাপ্রাপ্ত হোন।